অনলাইন ডেস্ক : তিন দিন আটকে রেখে একের পর এক দুষ্কৃতী পাশবিক অত্যাচার চালালো বছর ১৬-র নাবালিকার উপর। নারী সুরক্ষা নিয়ে দেশ যখন উত্তাল ঠিক তখনই এমন ভয়ংকর ঘটনা ঘটলো কাছাড়ের বড়খলা থানা এলাকার ভাঙ্গারপার, ছেচরি এসব এলাকায়। পশ্চিম শিলচরের বাসিন্দা ওই নাবালিকাকে এভাবে তিন দিন আটকে রেখে গণধর্ষণের পর দুষ্কৃতীরা ভোররাতে নিয়ে এসে ফেলে রেখে যায়, শিলচরের একটি স্থানে।
সোমবার বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পক্ষ থেকে শিলচরে এক সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে ভয়ংকর এই ঘটনার বিবরণ দিয়ে এর সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কর্মকর্তা শান্তনু নায়েক, মিঠুন নাথ ও দিলীপ দেবরা গনধর্ষণ কাণ্ডের বিবরণ দিতে গিয়ে জানান, ওই নাবালিকার কিছুটা মানসিক সমস্যা রয়েছে। গত ২২ আগস্ট ওই নাবালিকা এক ফেসবুক ফ্রেন্ড-এর সঙ্গে প্রথমবার সাক্ষাৎ করতে সঙ্গে বড়যাত্রাপুরের দিকে গিয়েছিল। ফেসবুক ফ্রেন্ডকে নাবালিকা আগে কখনও সামনা সামনি দেখেনি । তার সঠিক ঠিকানাও জানা ছিল না। বড়যাত্রাপুর এলাকায় পৌঁছার পর সেখানে এক অটোচালক তাকে ওই ফেসবুক ফ্রেন্ড-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করিয়ে দেবে বলে নিয়ে যায় কিছুটা দূরবর্তী একটি ঘরে। সেখানে অটোচালক নাবালিকাকে আটকে ধর্ষণের পর অন্যান্যদেরও ডেকে এনে অর্থের বিনিময়ে পাশবিক বাসনা চরিতার্থ করার সুযোগ করে দেয়। প্রাথমিক পর্যায়ে এভাবে একদিন ওই ঘরে আটকে রেখে কয়েকজন পাশবিক বাসনা চরিতার্থ করার সময় নাবালিকাকে মুখ বেঁধে চিৎকার করার সুযোগ দেওয়া হয়নি। এমনিতেই মানসিক সমস্যা রয়েছে, এর উপর এভাবে অত্যাচার চলার পর সময় অতিবাহিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নাবালিকার যেন হুঁশ বুদ্ধি সব হারিয়ে যায়। পরবর্তীতে দুষ্কৃতীদের কথামতোই কোনও বাধা না দিয়ে সবকিছু সহ্য করে যায় । প্রথম রাত এভাবে পার হওয়ার পর দ্বিতীয়দিন তাকে একটি লরিতে উঠিয়ে কিছুটা দূরে নিয়ে ওই লরির ভেতর তার উপর চরিতার্থ করা হয় পাশবিক বাসনা। দ্বিতীয় দিন লরি পর্বের পর গভীর রাতে নাবালিকাকে ছেড়ে দেওয়া হলে কোনওক্রমে নাবালিকা অদূরে একটি চা স্টল খোলা দেখে সেখানে যায়।ক্ষুধার জ্বালায় ওই চা স্টলের প্রৌঢ় মালিককে কিছু খাবার দেবার জন্য কাকুতি মিনতি করে। যদিও চা স্টলের মালিকের মনে কন্যাসম এই নাবালিকার বেহাল অবস্থা দেখে মোটেই দয়া জাগেনি। তার মনেও জেগে ওঠে পাশবিক প্রবৃত্তি। খাবার দিয়ে এর বিনিময়ে ওই চা স্টলের মালিক এবং তার কয়েকজন সঙ্গী সেখানেও নাবালিকার উপর চরিতার্থ করে পাশবিক বাসনা। তিন দিন এভাবে নারকীয় পরিস্থিতির মাঝে পার করার পর কয়েকজন একটি গাড়িতে করে নাবালিকাকে শিলচর শহরে নিয়ে এসে ভোররাতে ফেলে রেখে যায় তারাপুর এলাকায়। সেখান থেকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কর্মকর্তারা এই ঘটনার বিবরণ দিয়ে জানান, পুলিশ এপর্যন্ত এই ঘটনায় ৭ জনকে আটক করেছে। তবে নাবালিকার পরিবারের লোকেরা তার সঙ্গে কথা বলে যে বিবরণ পেয়েছেন সে অনুযায়ী তিনদিনের পাশবিকতায় জড়িত ছিল আরও কয়েকজন। তারা অন্যান্যদেরও শীঘ্র গ্রেফতারের পাশাপাশি এই ঘটনায় যারাই জড়িত তাদের সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন।