অনলাইন ডেস্ক : মুখ্যমন্ত্রী মামার কল্যাণে খুব কাছ থেকে হেলিকপ্টার দর্শন হলো। কেউ কেউ আবার এই আকাশযানে উঠেওছে। কী আনন্দ, আহা। কাদের আনন্দ? মামার মাদ্রাসা পড়ুয়া ভাগ্নেদের। মামার জন্যই যেন একটা স্বপ্নপূরণ হলো এতদিনে। একসঙ্গে দুটো সাধ মিটেছে ওই কচিকাঁচাদের। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। হেলিকপ্টার দেখার পাশাপাশি কজনের আবার ওতে উঠে ভেতরটা চোখ দিয়ে চেটেপুটে নেওয়ার অভিলাষও কানায় কানায় পূর্ণ হয়েছে।
শুক্রবার সকাল সকাল কাজিরাঙা গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। বাগরিতে অস্থায়ী হেলিপ্যাডে মাটি ছুঁয়েছে তাঁর কপ্টার। ফেরার সময় তিনি দেখেন, একটু দূরে পুলিশ ব্যারিকেডের পেছনে দাঁড়িয়ে আছে একঝাঁক মাদ্রাসা পড়ুয়া। বিস্ফারিত নয়নে একবার ওরা দেখছে মুখ্যমন্ত্রীকে তো পরমুহূর্তে বিহ্বল দৃষ্টি আটকে যাচ্ছে কপ্টারে। কাছাকাছি যে যাবে ওরা, সেই সাধ থাকলেও সাধ্য নেই। মুশকিল আসান করলেন মামা। কাছে ডেকে নিলেন মাদ্রাসার পড়ুয়াদের। আর কী চাই। মামার কাছে যাওয়ার সে কি হুটোপুটি। সবাই মামার সঙ্গে কথা বলতে চায়। মামার জিজ্ঞাসা, মাদ্রাসায় কী কী বিষয় পড়ানো হয়। ওরা বলল, কোরান শিক্ষার সঙ্গে অঙ্ক, ইংরেজি, বিজ্ঞান, সমাজ বিজ্ঞানও পড়ানো হয়। কিছুটা সংশয় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সত্যি এসব পড়ানো হয় তো! সমস্বরে ওরা জানায়, বিলক্ষণ পড়ানো হয়। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন, পরেরবার এলে কুঠুরি মাদ্রাসায় যাবেন। মামার পরের প্রশ্ন, পড়ুয়াদের মাথার টুপিকে কী বলে? ফের পড়ুয়াদের মিলিত কণ্ঠে ভেসে এল উত্তর- সুন্নত। শব্দটা মামার ঠিক পছন্দ হয়নি। ‘উঁহু, মনে হয় না সুন্নত বলে। অন্য কোনও ভালো শব্দ আছে নিশ্চয়’। টুক করে মামার মনটা পড়ে নিয়ে কয়েকজন পড়ুয়া ভাগ্নের চটপটে জবাব- পাগড়ি বলে, পাগড়ি। হ্যাঁ, এটা ভালো শব্দ, জানিয়ে দিলেন মামা।
এরপর এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। এমনিতে মামা সব সময়ই ভাগ্নেদের বেলায় ভীষণ উদার। কিন্তু কুঠুরির মাদ্রাসা পড়ুয়াদের তো আগে তেমন অভিজ্ঞতা হয়নি। তাই মামা যখন বললেন, কাছ থেকে ওরা হেলিকপ্টার দেখতে চায় না কি, সে কি আনন্দ ওদের! সবাই ভিড় জমায় হেলিকপ্টারের সামনে। মামার প্রশ্রয়ে কয়েকজন কপ্টারের ভেতরেও ঢুকেছে। তার বর্ণনা দিতে গিয়ে ওরা বলল, দারুণ ফুর্তি হয়েছে আজ। উফ, কী যে আনন্দ। মামার জন্যই এত মজা হলো। এই মামার জন্য ওরা দোয়া করবে। একসুরে সবাই তখন বলছে, ইনশাআল্লাহ, মামার ভালো হবে। দোয়া করব। আল্লাহ যেন মামাকে হেফাজতে রাখে। ভাগ্নেদের কাছ থেকে আর কী চাই মুখ্যমন্ত্রী মামার!