অনলাইন ডেস্ক : নির্ধারিত সময়ের এক ঘন্টারও বেশি সময় পরে মঞ্চে প্রথম ঘোষণা। এর আগে নানা বাদ্যের টুংটাং, ‘হ্যালো, মাইক্রোফোন চেক’, আলো প্রক্ষেপণ-পরীক্ষা ইত্যাদি। এরপর আয়োজক সিএনএন এবং বদরপুরের স্টুডিও মন্দিরার নিজস্ব পরিচিতি-পর্ব। তারপর উদ্যেশ্য-বিধেয় বর্ণনা করে সূচনাপর্ব পরিচালনার দায়িত্ব সৌমিত্র দত্ত তুলে দেন বাচিকশিল্পী মনোজ দেবের হাতে। শুরু হয় সম্মাননার পালা। অনুষ্ঠানে মূলত বরাকের বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যক্তিত্বদের এতে আগেই আহ্বান জানানো হয়। তাঁদের মধ্যে রবীন্দ্রগানের বরেণ্য প্রবীণ শিল্পী শিলচরের শিবাণী ব্রহ্মচারী, মৈত্রেয়ী দাম, করিমগঞ্জের খ্যাতনামা রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী-শিক্ষক রঞ্জিত চৌধুরী, জনপ্রিয় কিশোরকণ্ঠী শিল্পী সুজিত দাস (ফুলু), শিঙখঙ পাও কাবুই (চেঙকঙ), করিমগঞ্জের আরও এক সঙ্গীত-ব্যক্তিত্ব সুব্রত খাজাঞ্চি, হাইলাকান্দির শিল্পী বিজয় নাথ প্রমুখ উল্লেখযোগ্য। তাঁদের উত্তরীয় পরিয়ে সংবর্ধনা জানানো হয়। সংবর্ধনা জানান আয়োজক দুই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা। এরপর আয়োজক কর্মকর্তা ও অতিথিদের হাতে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে জম্পেশ আলোআঁধারি মঞ্চে শুরু হয় প্রত্যাশিত অন্বেষা সঙ্গীত সন্ধ্যা।উদ্বোধনীতে গণেশবন্দনার সুন্দর নৃত্য পরিবেশন করেন নৃত্যালয়ের চার শিল্পী। পরিচালনায় ছিলেন চন্দন মজুমদার। কিন্তু স্টার্টার হিসেবে কিছু একটা না হলে তো জমে না। মঞ্চে ডাক পড়ে অন্বেষার সঙ্গে কলকাতা থেকে আসা জয়ন্ত ভদ্রের। তিনি পরিচিত ও জনপ্রিয় কয়েকটি গানে বেশ জমিয়ে তোলেন আসর। শুরুতেই জানিয়ে রাখেন বরাকে তাঁর সঙ্গে যোগসূত্রের কথা। জয়ন্তের মাসির বাড়ি পাঁচগ্রাম। প্রথমেই করোনা-বিধ্বস্ত সময়ের কথা মাথায় রেখে অতিমারির জেরে ‘কোথায় হারিয়ে…’ যাওয়া দিনের গান ধরেন ‘পুরনো সেই দিনের কথা’। শ্রোতাদর্শকের মিলিত কণ্ঠ গান পরিবেশনের মহিমা বাড়িয়ে দেয়। একে একে তিনি বাংলাগানের নানা অলিগলি ঘুরে বেড়ান তাঁর সমকালীন কণ্ঠ-জাদুতে। পরিবেশনে ছিল হিন্দিগানও। সবশেষে ‘বিস্তীর্ণ দু’পারে’-র সুর ছড়িয়ে বিদায় নেন জয়ন্ত। আবেশ কাটতে না কাটতেই এবার ডাক পড়ে শনিবার সন্ধ্যার মূল আকর্ষণ টিভি ও বলিউড-টলিউডের নয়া প্রজন্মের হৃদয়জয়ী অন্বেষার।ছোটখাটো চেহারার খোলা ও এলোচুলে মুখে পরিচিত মিষ্টিহাসিতে হাজির তিনি, ধূমায়িত মঞ্চে হাততালি আর শিসের আওয়াজে প্রত্যাশিত শিল্পী অন্বেষা ওরফে অন্বেষা দত্তগুপ্ত। মঞ্চে তখন ঘোষণার দায়িত্বে তনুশ্রী। গান ধরলেন অন্বেষা। বললেন,’সঙ্গীত-নৃত্য ও শিল্পকলার জগত যাঁকে ছাড়া ভাবা যায় না, তিনি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর’। তাঁর প্রিয় রবীন্দ্রগান ‘আমার পরাণ যাহা চায়’। পয়লা গানেই হৃদয়ে পৌঁছে গেলেন। ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতের হার্টথ্রব, পশ্চিমবঙ্গের আলো-হাওয়ায় বেড়ে ওঠা অন্বেষা ‘সঙ্গীত-নৃত্য ও শিল্পকলার জগত যাঁকে ছাড়া ভাবা যায় না, তিনি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর’। তাঁর গানেই রাজীব ভবনে সূচনা প্রতীক্ষিত অন্বেষার আসর। এরপর মঞ্চের শাসক অন্বেষা দত্তগুপ্ত। বাংলা-হিন্দি, পুরনো-নতুন গানে শুধু মঞ্চ দখল নয়, রাজীব ভবনে সমাগত শ্রোতাদর্শকদের হৃদয়জয় করলেন অন্বেষা।