অনলাইন ডেস্ক : মণিপুর নিয়ে অবশেষে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকল কেন্দ্রীয় সরকার। বুধবার গভীর রাতে অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র দফতর টুইট করে জানিয়েছে, ২৪ জুন শনিবার এই বৈঠক হবে। প্রসঙ্গত, ওই দিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আমেরিকা সফর সেরে দেশে ফিরবেন। বৈঠকটি ডেকেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। প্রধানমন্ত্রীর সেই বৈঠকে সাধারণভাবে উপস্থিত থাকার কথা নয়। তবে তিনি মনে করলে থাকতেই পারেন। বিরোধীরা অবশ্য সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার দাবিই জানিয়েছিলেন।
মণিপুরে সংঘর্ষ শুরু হয় ৩ মে। সেই থেকে বিরোধী দলগুলি সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার দাবি দানিয়ে আসছে। গোলমাল শুরুর ৫১ দিন পর হতে যাওয়া বৈঠকের সিদ্ধান্ত এমন সময় ঘোষণা করা হল যখন কংগ্রেস মণিপুর নিয়ে লাগাতার আক্রমণের পর বুধবার মুখ খোলেন স্বয়ং সোনিয়া গান্ধী। ভিডিও বার্তায় সরকারের কঠোর নিন্দা করেন। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম থেকেই সরব উত্তর-পূর্বের ওই রাজ্যটির অস্থির পরিস্থিতি নিয়ে। প্রধানমন্ত্রীর নীরবতায় বারে বারে সরব হয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যে প্রায় ১২৫জনের প্রাণ গিয়েছে। আহত অসংখ্য। এলাকা ছাড়া প্রায় ৫০ হাজার পরিবার। প্রাণ রক্ষায় আশপাশের রাজ্যে পালিয়েছে বহু পরিবার।
বুধবারই গভীর রাতে দিল্লিতে তলব করা হয় অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাকে। তিনি প্রথম থেকেই মণিপুর পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছেন। বেশি রাতে তিনি দিল্লিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। তারপর বৈঠকের দিনক্ষণ জানানো হয়। শনিবার বিকাল ৩ টায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। মণিপুর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এখনও পর্যন্ত একটি কথাও বলেননি। মোদির নীরবতা এবং শাহের মন্ত্রকও কেন এতদিন পর সর্বদলীয় বৈঠক ডাকল তার স্পষ্ট কোনও ব্যাখ্যা মেলেনি। মণিপুরের একাধিক বিরোধী দল শুধু নয়, বিজেপির বিধায়কেরা পর্যন্ত দিল্লি গিয়ে ধর্ণা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিতে চেয়েছেন। কিন্তু সাড়া পাননি।
হাত গুটিয়ে থাকেনি বিরোধীরাও। বিশেষ করে কংগ্রেস প্রথম থেকেই কেন্দ্রীয় সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন তুলে সর্বদলীয় বৈঠক করে পরিস্থিতি পর্যালোচনার দাবি জানিয়ে আসছিল। মণিপুরের প্রাক্তন কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী ইবোবি সিংহ দিল্লি গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চান। তিনি কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএম, সিপিআই, জেডিইউ এবং আপের প্রতিনিধিদের স্বাক্ষর সম্বলিত চিঠি পাঠান প্রধানমন্ত্রীকে। কিন্তু মোদির অফিস নিরুত্তর থেকেছে। বিরোধীদের কথা কানে তোলেননি অমিত শাহও। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সংসদীয় কমিটিকে চিঠি দেন অবিলম্বে মণিপুর পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য। কমিটির চেয়ারম্যানও কোনও উদ্যোগ নেননি।